ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালিত হচ্ছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪০:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাংলাদেশিদের স্বাধীনতা আকাঙ্ক্ষা স্তিমিত করতে মূলত এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। আজ সেই ভয়াল ২৫ শে মার্চ, গণহত্যা দিবস।

১৯৭১ সালের এই দিনে মধ্যরাতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। তাদের এই সশস্ত্র অভিযানের নাম ছিল অপারেশন সার্চলাইট।

পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এই অভিযানের নীল নকশা তৈরি করে। তবে তারা এই অভিযানের কোন লিখিত কাগজ রাখেনি। পুরো পরিকল্পনাটি করা হয়েছিল মুখে মুখে। অবশ্য পরে মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজার আত্মজীবনী “স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি” তে অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করেন।

অপারেশন সার্চলাইট বা ২৫ শে মার্চের গণহত্যা সম্পর্কে মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন লিখেন, সেই ভয়াল রাতে প্রায় ৭ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় প্রায় ৩ হাজার মানুষ। তবে এটি তো মাত্র ঘটনার শুরু ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ বাড়িয়েই চলল। বাড়িঘর আগুনে জ্বালানো শুরু করলো, দোকানপাট লুট করা শুরু করলো। আস্তে আস্তে এসব যেন তাদের নেশায় পরিণত হয়ে গেল। এমনকি রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক এবং শিয়ালে খেতে থাকল।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালিত হচ্ছে

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ সম্পর্কে খোদ পাকিস্তান সরকার কিছু দলিল প্রকাশ করেছে। সেখানেও তারা লক্ষ লক্ষ বাঙালির জীবননাশের কথা প্রকাশ করেছে। এই রাতে তাদের আরেকটি লক্ষ্য ছিল বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা। যার কারণে বেগম রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলেও তারা নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়।

ডঃ মনিরুজ্জামান, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো নয় জন শিক্ষককে তারা নৃশংসভাবে হত্যা করে। অপারেশন সার্চলাইটের সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গোপনে ঢাকা থেকে করাচি চলে যান। তারপর তারা জাতির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে তার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করেন।

অবশ্য বঙ্গবন্ধু ২৬ শে মার্চ রাতেই রেডিওতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাঙালি জাতিকে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে তোলার আহ্বান জানান। তা সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি নির্ভীকভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করতে থাকে। তারপর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি ও বাংলাদেশ পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে রচিত হয় নতুন একটি ইতিহাস এবং নতুন এক দেশের। ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ রাত ১১ টা থেকে ১১ টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে “ব্ল্যাকআউট” পালন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালিত হচ্ছে

আপডেট সময় : ০৩:৪০:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাংলাদেশিদের স্বাধীনতা আকাঙ্ক্ষা স্তিমিত করতে মূলত এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। আজ সেই ভয়াল ২৫ শে মার্চ, গণহত্যা দিবস।

১৯৭১ সালের এই দিনে মধ্যরাতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। তাদের এই সশস্ত্র অভিযানের নাম ছিল অপারেশন সার্চলাইট।

পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এই অভিযানের নীল নকশা তৈরি করে। তবে তারা এই অভিযানের কোন লিখিত কাগজ রাখেনি। পুরো পরিকল্পনাটি করা হয়েছিল মুখে মুখে। অবশ্য পরে মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজার আত্মজীবনী “স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি” তে অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করেন।

অপারেশন সার্চলাইট বা ২৫ শে মার্চের গণহত্যা সম্পর্কে মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন লিখেন, সেই ভয়াল রাতে প্রায় ৭ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় প্রায় ৩ হাজার মানুষ। তবে এটি তো মাত্র ঘটনার শুরু ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ বাড়িয়েই চলল। বাড়িঘর আগুনে জ্বালানো শুরু করলো, দোকানপাট লুট করা শুরু করলো। আস্তে আস্তে এসব যেন তাদের নেশায় পরিণত হয়ে গেল। এমনকি রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক এবং শিয়ালে খেতে থাকল।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালিত হচ্ছে

১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ সম্পর্কে খোদ পাকিস্তান সরকার কিছু দলিল প্রকাশ করেছে। সেখানেও তারা লক্ষ লক্ষ বাঙালির জীবননাশের কথা প্রকাশ করেছে। এই রাতে তাদের আরেকটি লক্ষ্য ছিল বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা। যার কারণে বেগম রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলেও তারা নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়।

ডঃ মনিরুজ্জামান, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো নয় জন শিক্ষককে তারা নৃশংসভাবে হত্যা করে। অপারেশন সার্চলাইটের সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গোপনে ঢাকা থেকে করাচি চলে যান। তারপর তারা জাতির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে তার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করেন।

অবশ্য বঙ্গবন্ধু ২৬ শে মার্চ রাতেই রেডিওতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বাঙালি জাতিকে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে তোলার আহ্বান জানান। তা সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি নির্ভীকভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করতে থাকে। তারপর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি ও বাংলাদেশ পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে রচিত হয় নতুন একটি ইতিহাস এবং নতুন এক দেশের। ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ রাত ১১ টা থেকে ১১ টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে “ব্ল্যাকআউট” পালন করা হবে।