ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি আসলে কারা এবং কী তাদের উদ্দেশ্য

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১৪:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৫৯ বার পড়া হয়েছে

কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় দুই দিনে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি এবং ব্যাংক ম্যানেজার কে অপহরণের ঘটনায় নতুন করে আলোচনা এসেছে কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি। তারপর আলীকদমে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি চেকপোস্টেও হামলা চালানোর দুঃসাহস দেখিয়েছে তারা। তারপর থেকেই বিগত কয়েকদিন ধরে এই সশস্ত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে যৌথ অভিযান।

কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি আসলে কারা?

কুকি চীন বা কেএনএফ সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে নাথান বম সম্পর্কে। নাথান বম এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি কুকি চীন জাতীয় ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যার সদস্য ছিল কুকি চীনের সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। পরে কয়েক দফায় নাম বদলে এটি হয় কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি বা কেএনএফ। এটি মূল সংগঠন ওকে চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট আরটি একটি সশস্ত্র উইং।

কুকিং চীনের প্রথম তৎপরতা দৃশ্যমান হয় ২০২২ সালে। এরপর থেকে বিগত দুই বছর ধরে বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় নাথান বোমের নেতৃত্বে তারা তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে আসছে। এর মধ্যেও নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে ট্রেনিং দেওয়ার পর আলোচনায় আসে কুকিচেন। বাংলাদেশ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর তারা এ দেশ থেকে সরে গেলেও নতুন করে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তারা পার্বত্য অঞ্চলের কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন। এখন তারা নিজেদের জন্য স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চাচ্ছে। তাদের এলাকায় বম, খিয়াং, লুসাই, খুমি, ম্রোরা থাকবে। বাকি ক্ষুদ্র নিয়ে গোষ্ঠীগুলো যেমন চাকমা মারমা কিংবা ত্রিপুরা থাকতে পারবেনা।

সংক্ষেপে বলতে গেলে তারা আসলে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং বান্দরবান এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ চায়। এব্যাপারে বান্দরবান জেলার স্থানীয় উপজেলার চেয়ারম্যান থোয়াই হ্লা মং মার্মা বলেন, তারা কিভাবে এ সকল এলাকা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে? তারা তো বর্তমানে লুট আর চাঁদাবাজি করে আবার পাহাড়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে বান্দরবন জেলার পুলিশ কমিশনার সৈকত শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে বান্দরবানের পার্বত্য এলাকা গুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। কোথাও কোন হামলার আশঙ্কা নেই। তবে কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মির অস্তিত্ব আছে এরকম জায়গায় গুলোতে যৌথ আভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি এলাকাগুলোতে বিজিবি এবং র্যাব মোতায়ন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি আসলে কারা এবং কী তাদের উদ্দেশ্য

আপডেট সময় : ১০:১৪:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় দুই দিনে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি এবং ব্যাংক ম্যানেজার কে অপহরণের ঘটনায় নতুন করে আলোচনা এসেছে কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি। তারপর আলীকদমে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি চেকপোস্টেও হামলা চালানোর দুঃসাহস দেখিয়েছে তারা। তারপর থেকেই বিগত কয়েকদিন ধরে এই সশস্ত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে যৌথ অভিযান।

কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি আসলে কারা?

কুকি চীন বা কেএনএফ সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে নাথান বম সম্পর্কে। নাথান বম এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি কুকি চীন জাতীয় ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যার সদস্য ছিল কুকি চীনের সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। পরে কয়েক দফায় নাম বদলে এটি হয় কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মি বা কেএনএফ। এটি মূল সংগঠন ওকে চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট আরটি একটি সশস্ত্র উইং।

কুকিং চীনের প্রথম তৎপরতা দৃশ্যমান হয় ২০২২ সালে। এরপর থেকে বিগত দুই বছর ধরে বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় নাথান বোমের নেতৃত্বে তারা তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে আসছে। এর মধ্যেও নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে ট্রেনিং দেওয়ার পর আলোচনায় আসে কুকিচেন। বাংলাদেশ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর তারা এ দেশ থেকে সরে গেলেও নতুন করে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তারা পার্বত্য অঞ্চলের কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন। এখন তারা নিজেদের জন্য স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চাচ্ছে। তাদের এলাকায় বম, খিয়াং, লুসাই, খুমি, ম্রোরা থাকবে। বাকি ক্ষুদ্র নিয়ে গোষ্ঠীগুলো যেমন চাকমা মারমা কিংবা ত্রিপুরা থাকতে পারবেনা।

সংক্ষেপে বলতে গেলে তারা আসলে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং বান্দরবান এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ চায়। এব্যাপারে বান্দরবান জেলার স্থানীয় উপজেলার চেয়ারম্যান থোয়াই হ্লা মং মার্মা বলেন, তারা কিভাবে এ সকল এলাকা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে? তারা তো বর্তমানে লুট আর চাঁদাবাজি করে আবার পাহাড়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে বান্দরবন জেলার পুলিশ কমিশনার সৈকত শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে বান্দরবানের পার্বত্য এলাকা গুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। কোথাও কোন হামলার আশঙ্কা নেই। তবে কুকি চীন ন্যাশনাল আর্মির অস্তিত্ব আছে এরকম জায়গায় গুলোতে যৌথ আভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি এলাকাগুলোতে বিজিবি এবং র্যাব মোতায়ন করা হয়েছে।