সর্বজনীন পেনশন সুবিধা কি কি থাকছে এতে?
- আপডেট সময় : ০৭:০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪
- / ৪৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুবিধা। আগে এই সুবিধা শুধুমাত্র সরকারি ও আধা সরকারি চাকুরীজীবীদের জন্য ছিল। কিন্তু এখন দেশের সকল শ্রেণীর নাগরিককে এই সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ১৮ বছরের বেশি হলেই যে কেউ অনলাইনে এই পেনশন সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ১৭ আগস্ট ২০২৩ এ এটি উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, “আমাদের সরকারি চাকরিজীবিরা পেনশন পান, কিন্তু যারা সরকারি চাকরি করেন না তারা তো এই সুবিধা পায় না। কাজেই সরকারি চাকরিজীবীদের বাইরে যে জনগোষ্ঠী তাদের জন্য এই ব্যবস্থা।”
বাংলাদেশ সরকার মোট ৬ ধরনের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে চালু হয়েছে ৪ টি। এগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা। চালু হওয়ার পর থেকেই নানা রকম আলোচনা, নানারকম প্রশ্ন হচ্ছে এই সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে। কিভাবে এতে নিবন্ধন করা যাবে?, সুবিধা কি কি?, কত টাকা ও কিভাবে জমা দিতে হবে? ইত্যাদি ইত্যাদি।
সর্বজনীন পেনশন সুবিধা কি কি থাকছে এতে?
আপনাদের এই সকল প্রশ্নের উত্তর এখনই পেয়ে যাবেন। তাই ধৈর্য সহকারে পুরো লেখাটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইল। এতে করে আপনিও বুঝতে পারবেন সার্বজনীন পেনশন স্কিমটি আপনার জন্য উপযোগী কিনা।
কাদের জন্য এই পেনশন সুবিধা?
ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষ এই পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে ও জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকলে কিভাবে আবেদন করব?
তবে যাদের এই মুহূর্তে জাতীয় পরিচয়পত্র নেই কিন্তু পাসপোর্ট রয়েছে তারাও আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে সেটির কপি জমা দিতে হবে।
বয়স ৫০ এর বেশি হলে কি এই সুবিধা নিতে পারব না?
আবার যাদের বয়স ৫০ এর বেশি হয়ে গেছে, তারাও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে পেনশন পাওয়ার জন্য তাকে অবশ্যই টানা ১০ বছর চাঁদা জমা দিতে হবে।
- অর্থাৎ কোন ব্যক্তির বয়স ৬০ বছর হলেই তিনি পেনশন পাওয়া শুরু করবেন।
- কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি ৫৫ বছর বয়সে সর্বজনীন পেনশনটি স্কিম টি শুরু করেন তাহলে তিনি ৬৫ বছর বয়সে গিয়ে পেনশনের
- সুবিধা পাওয়া শুরু করবেন। কারণ তাকে সর্বনিম্ন ১০ বছর চাঁদার টাকা আগে জমা দিতে হবে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে চাঁদার পরিমাণ কত?
স্কিমের প্রকারভেদে চাঁদার পরিমাণ বিভিন্ন রকম। প্রবাস স্কিমে চাঁদার পরিমাণ প্রতি মাসে ৭ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার ও ১০ হাজার টাকা। আপনার সুবিধামত যেকোনো একটি টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে নিয়ে আপনার স্কিমটি চালাতে পারবেন। তবে চাইলে আপনি ৩/৯/১২ মাসের চাঁদা একসাথেও প্রদান করতে পারবেন।
সুরক্ষা স্কিমে প্রতি মাসে ১ হাজার, ২ হাজার ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা প্রদান করার সুবিধা রয়েছে।সমতা স্কিমে চাঁদার পরিমাণ একটিই নির্ধারণ করা হয়েছে।সেটি হচ্ছে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা। এর মধ্যে পেনশন সুবিধা ভোগকারীকে ৫০০ টাকা দিতে হবে, বাকি ৫০০ টাকা সরকার প্রদান করবে।
কোথায় গিয়ে চাঁদা প্রদান করবেন?
সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের চাঁদা প্রদান করা যাবে। এর পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমেও চাঁদা প্রদান করার সুযোগ রয়েছে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে খুব শীঘ্রই অন্যান্য ব্যাংকগুলোতেও চাঁদা প্রদানের সুবিধা চালু হবে।
কত বছর বয়স পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করা যাবে?
পেনশনারগণ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অর্থাৎ আজীবন এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তবে কোন সুবিধাভোগী ব্যক্তি যদি ৭৫ বয়স হওয়ার আগে মারা যান তাহলে তার নমিনি সুবিধাভোগী ব্যক্তির বয়স ৭৫ হওয়া পর্যন্ত পেনশন সুবিধা পাবেন।
কিছুদিন চাঁদা দেওয়ার পর পেনশনার মারা গেলে টাকা কে পাবে?
যদি কোন পেনশন সুবিধাভোগী ব্যক্তি ১০ বছর চাঁদা দেয়ার আগেই মারা যান তাহলে তার জমাকৃত অর্থগুলি তার নমিনিকে প্রদান করা হবে।
স্কিম পূর্ণ হওয়ার পর পেনশনের টাকা কিভাবে পাব?
পেনশনের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে পেনশনারকে কোন অফিসে যেতে হবে না। একটানা ১০ বছর চাঁদা প্রদান করার পর পেনশনারের বয়স ৬০ বছর হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মাসিক পেনশনের টাকা জমা হবে।
আশা করি সর্বজনীন পেনশন সুবিধাটি সম্পর্কে আপনাদের মোটামুটি একটা ধারণা হয়েছে। এ সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটিতে চোখ রাখুন।